আমি ততদিনও অপেক্ষায় ছিলাম, যতদিন অপেক্ষা করার আর কোনো কারণ থাকে না।
অপেক্ষারাও বড় অদ্ভুত ছেলেমানুষ। হুটহাট চলে যায় আবার ফিরেও আসে। তুচ্ছ থেকে তুচ্ছতর কারণে তাদের এইসব উদ্ভট যাতায়াত। ভদ্রতাসূচক একটা হাসিতেও ফিরে আসে অপেক্ষা। নিতান্তই স্বাভাবিক অমনোযোগে চলেও যায়। সে কি শুধুই চলে যাওয়া? কিশোর ছেলেরা যেমন রাগ করে 'আর কখনো ফিরে আসবো না' বলে ঘর ছেড়ে বেরিয়ে যায়, সেভাবে সবকিছু ছেড়েছুড়ে বিদায় বলে যাওয়া।
অপেক্ষারা তবু ফিরে আসে। অপেক্ষারা ফিরে আসার ছুতো খোঁজে, পেয়েও যায়।
অপেক্ষার এই নিরন্তর যাতায়াত থেমে গেলে অপেক্ষারও একদিন মৃত্যু হয়। নক্ষত্রের মৃত্যু হলে বিস্ফোরণ ঘটে, অপেক্ষার মৃত্যু হয় চুপচাপ। অপেক্ষারা চুপচাপ চলে যায়। অথচ কী আশ্চর্য, অপেক্ষার মৃত্যু হলে টের পাওয়া যায়, কিছুই আর আগের মতো নেই। না আকাশ, না পৃথিবী, এমনকি নিঃশ্বাসটাও যেন আপাদমস্তক বদলে গেছে।
আমার অপেক্ষারা ততদিনও বেঁচে ছিল, যতদিন অপেক্ষাদের বাঁচার কোনো নিয়ম নেই। আলো নেই, বাতাস নেই, নিরন্তর আসা-যাওয়া নেই, তবু তারা নিতান্তই অসাড় হয়ে জড়বস্তুর মতো বেঁচে ছিল।
আমার অপেক্ষারা মরে যাওয়ার পরও, বেঁচে ওঠার অপেক্ষায় থাকবে অনেকদিন, অনেকগুলো দিন।
No comments:
Post a Comment